নীলগিরি ও নীলাচল

পরিচয়

নীলগিরিনীলাচল বান্দরবানের দুটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনস্থল, যেগুলো থেকে মেঘ ছোঁয়া পাহাড় ও অনন্য প্রকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। নীলগিরি অবস্থিত বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এবং এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। এখানে থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। নীলগিরি অবস্থান করে একটি পর্বতচূড়ায়, যেখানে অবস্থান করলে মনে হয় যেন আপনি মেঘের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। এর উচ্চতা প্রায় ২,২০০ ফুটেরও বেশি, এবং এখান থেকে আশেপাশের সবুজ পাহাড়, নদী ও গ্রামের দৃশ্য দেখা যায়।

নীলাচল বান্দরবান শহরের কাছেই অবস্থিত, শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে। এটি জেলা প্রশাসনের পরিচালনাধীন একটি দর্শনীয় স্থান, যেখানে পাহাড়ি দৃশ্য, শহরের উপরিভাগ এবং অনেক সময় মেঘের আস্তরণ দেখা যায়। স্থানীয় ভাষায় একে “মেঘের উপত্যকা” বলেও অভিহিত করা হয়। নীলাচলে একটি চমৎকার ভিউ পয়েন্ট আছে যেখান থেকে পুরো বান্দরবান শহরকে দেখা যায়।

কিভাবে যাবেন

বান্দরবান শহর থেকে চাঁদের গাড়ি বা মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে সহজেই নীলাচল ও নীলগিরিতে যাওয়া যায়। শহর থেকে নীলাচল যেতে প্রায় ২০-৩০ মিনিট সময় লাগে, আর নীলগিরি যেতে সময় লাগে প্রায় ২-২.৫ ঘণ্টা। নীলগিরি রোড কিছুটা সংকীর্ণ ও ঘুরপথবিশিষ্ট হওয়ায় গাড়ির চালক অভিজ্ঞ হওয়া জরুরি। বাস সার্ভিস বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যাওয়াও সম্ভব। নীলাচলে পৌঁছানোর পর, আশপাশে ঘোরাঘুরি করা সহজ। যারা ঢাকার দিক থেকে আসছেন, তারা প্রথমে চট্টগ্রাম বা কক্সবাজার হয়ে বান্দরবান পৌঁছাতে পারেন। সেখান থেকে লোকাল যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

নীলগিরিতে সেনাবাহিনীর রিসোর্টে রাত্রিযাপন করা যায়, তবে আগেই বুকিং করতে হয়। এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ কটেজ রয়েছে যা পাহাড়ের কোলে নির্মিত। রাতে থেকে ভোরে সূর্যোদয় দেখার জন্য পর্যটকেরা এখানে থাকতে পছন্দ করেন। নীলাচলের কাছাকাছি এলাকায়ও কটেজ ও হোটেল আছে, যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো শহরসংলগ্ন এবং সহজে অ্যাক্সেসযোগ্য। চাইলে বান্দরবান শহরেও থেকে দিনে দিনে ঘুরে যাওয়া যায়। শহরে রয়েল হোটেল, হোটেল হিলভিউ, বনবিলাস রিসোর্ট প্রভৃতি থাকার জন্য ভালো ব্যবস্থা। এ ছাড়া হোস্টেলধর্মী কিছু আবাসিক ব্যবস্থাও আছে যা সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।

কোথায় খাবেন

নীলগিরি ও নীলাচলে ছোট ছোট ক্যান্টিন ও খাবারের দোকান আছে, তবে পর্যাপ্ত খাবার নাও পেতে পারেন। তাই শহর থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া ভালো। সেনাবাহিনীর ক্যান্টিনেও নির্দিষ্ট সময়ে খাবার পাওয়া যায়। বান্দরবান শহরে বিভিন্ন মানসম্মত রেস্টুরেন্ট যেমন হোটেল হিলভিউ-এর রেস্টুরেন্ট, বনবিলাস ক্যাফে, স্থানীয় খাবার পরিবেশনকারী হোটেলগুলো রয়েছে। ত্রিপুরা বা মারমা খাবার পছন্দ করলে স্থানীয় কিছু দোকানে সেই স্বাদ পাওয়া যাবে।

অতিরিক্ত টিপস

  • খুব সকালে গেলে মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা পাবেন।

  • ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়কাল সবচেয়ে ভালো।

  • ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।

  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

  • শিশু বা বয়স্কদের নিয়ে গেলে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।

  • সানগ্লাস, সানস্ক্রিন এবং হালকা গরম কাপড় সঙ্গে নিন।

  • ট্রেকিং বা হাইকিং পছন্দ করলে স্থানীয় গাইড নিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়।

ম্যাপ অবস্থান

 

নীলগিরি
নীলগিরি ও নীলাচল

You May Also Like

About the Author: admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *